ধমনী ও শিরার মধ্যে পার্থক্য সম্পর্কে অবাক করা তথ্য জানুন
সূচিপত্রঃ ধমনী ও শিরার যাবতীয় কার্যক্রম সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জেনে নিন
ধমনী ও শিরার মধ্যে পার্থক্য
ধমনী ও শিরার মধ্যে পার্থক্য সম্পর্কে আপনারা জানতে চেয়েছেন। আজকের এই পর্বে আমরা ধমনী ও শিরার মধ্যে কি কি পার্থক্য রয়েছে তা সম্পর্কে আপনাদের জানিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক।
- ধমনীতে সাধারণত রক্তচাপের পরিমাণ বেশি থাকতে দেখা যায়। অন্যদিকে শিরাতে রক্তচাপের পরিমাণ কম থাকতে দেখা যায়। এছাড়াও ধমনীর ক্ষেত্রে ভালভ থাকতে দেখা যায় না। অপরদিকে শিরাতে ভালভ থাকতে দেখা যায়। যেটির কাজ হল রক্তকে বিপরীত প্রান্তে যাওয়া থেকে আটকে রাখা। ধমনীর অবস্থান মূলত আমাদের শরীরের খুব গভীরে। অন্যদিকে শিরার অবস্থান আমাদের ত্বকের খুবই নিকটে।
- ধমনীকে সাধারণত অক্সিজেনযুক্ত রক্ত বহন করতে দেখা যায়। শুধুমাত্র একটি ক্ষেত্রে অক্সিজেনযুক্ত রক্ত বহন করতে দেখা যায় না। সেটি হল ফুসফুসের ধমনীর ক্ষেত্রে। অন্যদিকে শিরাতে অক্সিজেন মুক্ত রক্ত বহন করতে দেখা যায়। এখানেও একটি ক্ষেত্রে অক্সিজেন মুক্ত হতে দেখা যায় না। আর তা হলো ফুসফুসের শিরা।
- ধমনীর প্রাচীরের গঠন সাধারণত পুরু হয়ে থাকে। এছাড়াও শক্ত, স্থিতিস্থাপকও হতে দেখা যায়। অন্যদিকে শিরাতে প্রাচীরের গঠন সাধারণত পাতলা হতে দেখা যায়। তাছাড়াও এটি নমনীয়ও হয়ে থাকে। ধমনীর ক্ষেত্রে দেখা যায় এটি হৃদয় থেকে শরীরে নানা অংশে রক্ত নিয়ে যাচ্ছে। আর অন্যদিকে শিরাতে দেখা যায় এটি আমাদের শরীরের নানা অংশ থেকে বরং রক্ত ফেরত আনে।
ধমনী ও শিরা কাকে বলে
ধমনী ও শিরা কাকে বলে এই সম্পর্কে আপনারা জানতে চেয়েছেন। আজকের এই পর্বে আমরা ধমনী ও শিরা কাকে বলে তা আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করব। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক।
ধমনীঃ শরীরের যে অংশটি রক্তনালিকা অথবা হৃৎপিণ্ড থেকে শরীরের নানা
অংশে রক্ত পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করে থাকে তাকেই মূলত ধমনী বলা হয়ে থাকে।
এটির সাধারণত কোন প্রকার ছিদ্র থাকতে দেখা যায় না। যার কারণে রক্ত বাইরে
যাওয়ার পথ পাইনা। আর এভাবে এটি খুব সহজে রক্ত বহন করে থাকে। এর প্রাচীরের দিকে
লক্ষ্য রাখলে দেখা যায় এর প্রাচীর অনেক মোটা হয়ে থাকে। একই সাথে এটিকে
স্থিতিস্থাপক হতেও দেখা যায়। এর কারণ হলো মূলত এটিকে উচ্চ রক্তচাপ সহ্য করার
মতো পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হয়। এর প্রধান ধমনীর নাম হচ্ছে মহাধমনী। এছাড়াও
এর দুটি শাখার নাম হচ্ছে করোটিড ধমনী এবং অন্যটি হচ্ছে করোনারি ধমনী। আশা করছি
ধমনী সম্পর্কে ধারণা পেয়েছেন।
শিরা ও ধমনীর কাজ কি
শিরা ও ধমনীর কাজ কি এই সম্পর্কে আপনারা জানতে চেয়েছেন। আজকের এই পর্বে আমরা শিরা ও ধমনীর কাজ কি তা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়ার চেষ্টা করব। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক।
শিরাঃ এর প্রধান কাজ হল আমাদের শরীরের যে রক্তে কম অক্সিজেন থাকতে দেখা যায় সেই রক্ত আমাদের শরীরের বিভিন্ন অংশ থেকে হৃদয়ের দিকে ফিরিয়ে আনা। এটিই হল এর প্রধান কাজ। এছাড়াও এর মধ্যে কপাটিকা থাকতে দেখা যায়। যার কাজ হল রক্ত একই দিকে যাতে প্রবাহিত হতে পারে সেজন্য তাকে সাহায্য করা। সেই সাথে এটি রক্তকে বিপরীত প্রান্তে যেতে আটকিয়ে থাকে।
শিরা ও ধমনী কোথায় থাকে
শিরা ও ধমনী কোথায় থাকে এই সম্পর্কে আপনারা জানতে চেয়েছেন। আজকের এই পর্বে আমরা শিরা ও ধমনী কোথায় থাকে তা সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়ার চেষ্টা করব। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক। শিরা ও ধমনী সাধারণত আমাদের শরীরের পুরো অংশ জুড়ে থাকতে দেখা যায়। এদের কাজ একেক রকম হয়ে থাকে। যেমন ধমনীর প্রধান কাজ হল আমাদের শরীরের হৃদপিণ্ড থেকে রক্ত নিয়ে তা শরীরের নানা অংশে বহন করে থাকে।
এছাড়াও এটিকে সাধারণত আমাদের শরীরের খুবই গভীরে থাকতে দেখা যায়। অন্যদিকে শিরার প্রধান কাজ হল আমাদের শরীরের নানা অংশ থেকে রক্ত হৃৎপিণ্ডে ফেরত আনা। আর এটিকে সাধারণত আমাদের ত্বকের খুবই কাছাকাছি থাকতে দেখা যায়। এই দুইটি অংশ আমাদের শরীরের কার্যকারিতা সঠিকভাবে পরিচালনা করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই বলা যায় যে ধমনী এবং শিরা আমাদের শরীরের পুরো অংশ জুড়ে রয়েছে। এছাড়াও আপনারা চাইলে উপরের আলোচনা থেকে ধমনী ও শিরার মধ্যে পার্থক্য কি তা জেনে আসতে পারেন।
ধমনী এবং শিরা দেখতে কেমন হয়
ধমনী ও শিরা মনে রাখার উপায়
ধমনী ও শিরা মনে রাখার উপায় সম্পর্কে আপনারা জানতে চেয়েছেন। আজকের এই পর্বে আমরা ধমনী ও শিরা মনে রাখার যাবতীয় কৌশল আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করব। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক।
ধমনীঃ এটিকে যেভাবে আপনারা মনে রাখবেন তার কৌশল নিচে দেয়া হলঃ
- এটি অক্সিজেন রয়েছে এমন রক্ত শরীরের নানা অংশে পৌঁছে দেয়।
- এর প্রাচীর পুুরু হয়ে থাকে।
- এটিতে রক্ত চলাচল খুব দ্রুত সম্পন্ন হয়।
- এটি কার্বন-ডাই-অক্সাইড রয়েছে এমন রক্ত শরীরের নানা অংশ থেকে ফিরিয়ে আনে।
- এর প্রাচীর পাতলা হয়ে থাকে।
- কপাটিকা রয়েছে যা রক্তকে বিপরীত দিকে যেতে বাঁধা দেয়।
ধমনী ও শিরা কি একই
ধমনী ও শিরা কি একই এ ধরনের প্রশ্ন আপনারা করে থাকেন। আজকের এই পর্বে আমরা ধমনী ও শিরা একই কিনা তা জেনে নেওয়ার চেষ্টা করব। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক। ধমনী ও শিরা মূলত দুই ধরনের ভিন্ন রক্তনালী। এদের যাবতীয় কার্যক্রম ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। এছাড়াও এদের মধ্যে যথেষ্ট পরিমাণে পার্থক্য রয়েছে। এদিক দিয়ে বলা যায় যে ধমনী ও শিরা একই নয়। চলুন এর যাবতীয় কার্যাবলী গুলো দেখে আসিঃ
ধমনীঃ এর প্রধান কাজ হল হৃৎপিণ্ড থেকে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত শরীরের নানা অংশে পৌঁছে দেওয়া। এটি সাধারণত মজবুত ধরনের হয়ে থাকে। একই সঙ্গে এটি পুরু এবং স্থিতিস্থাপকও হতে দেখা যায়। এর রক্ত প্রবাহ সাধারণত খুব দ্রুত সম্পূর্ণ হয়ে থাকে। এসবগুলোই হচ্ছে ধমনীর যাবতীয় কার্যক্রম।
শিরাঃ এর প্রধান কাজ হল শরীরের নানা অংশ থেকে কার্বন-ডাই-অক্সাইড সমৃদ্ধ রক্ত সংগ্রহ করে হৃদপিন্ডে ফিরিয়ে আনা। এর প্রাচীর সাধারণত পাতলা ধরনের হয়ে থাকে। তাছাড়াও এর প্রাচীর নমনীয়ও হতে দেখা যায়। সেই সাথে এটি কম স্থিতিস্থাপক হয়ে থাকে। এর রক্ত প্রবাহ সাধারণত খুব ধীরগতিতে সম্পন্ন হয়ে থাকে। এসবগুলোই হচ্ছে শিরার যাবতীয় কার্যক্রম।
হাতের ধমনী ও শিরা চেনার উপায়
হাতের ধমনী ও শিরা চেনার উপায় সম্পর্কে আপনারা জানতে চেয়েছেন। আজকের এই পর্বে আমরা হাতের ধমনী ও শিরা খুব সহজে কিভাবে চেনা যায় তা সম্পর্কে জেনে নেওয়ার চেষ্টা করব। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক। আপনারা প্রথমে স্পন্দন পরীক্ষা করার মাধ্যমে হাতের ধমনী ও শিরা চিনতে পারেন। আপনারা লক্ষ্য করলে দেখতে পাবেন যে হাতের ধমনীতে খুব সহজে স্পন্দন অনুভব করা সম্ভব হয়। অন্যদিকে হাতের শিরাতে স্পন্দন অনুভব করা সম্ভব হয় না।
শিরা ও ধমনী কি একসাথে চলে
শিরা ও ধমনী কি একসাথে চলে এই সম্পর্কে আপনারা প্রশ্ন করে থাকেন। আজকের এই পর্বে আমরা ধমনি এবং শিরা একসাথে চলে কিনা তা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়ার চেষ্টা করব। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক।
- শিরা ও ধমনী কি একসাথে চলে এমন ধরনের প্রশ্ন আসলে উত্তর হবে না। কেননা শিরা ও ধমনীর কার্যক্রম ভিন্ন ধরনের। এগুলো নিজ নিজ কাজ পরিচালনা করে থাকে। তাই প্রশ্নই আসে না যে এটি একই সঙ্গে চলে। ধমনীর কাজ হল হৃদপিণ্ড থেকে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত শরীরের নানা প্রান্তে পৌঁছে দেওয়া। অন্যদিকে শিরার কাজ হল কার্বন ডাই অক্সাইড সমৃদ্ধ রক্ত শরীরের নানা প্রান্ত থেকে সংগ্রহ করে হৃদপিণ্ডে ফিরিয়ে আনা।
- ধমনীর প্রাচীর সাধারণত পুরু হয়ে থাকে। এছাড়াও এর প্রাচীর স্থিতিস্থাপক হতেও দেখা যায়। অন্যদিকে শিরার প্রাচীর পাতলা ধরনের হয়ে থাকে। সেই সাথে এর প্রাচীর নমনীয় এবং কম স্থিতিস্থাপক হতে দেখা যায়। ধমনীতে আঘাত লাগলে খুব দ্রুত রক্ত বের হতে থাকে। অন্যদিকে শিরাতে আঘাত লাগলে রক্ত খুব ধীরগতিতে বের হতে থাকে। তাই বলা যায় যে শিরা ও ধমনী একসাথে কখনোই চলে না। এছাড়াও আপনারা চাইলে উপরের আলোচনা থেকে ধমনী ও শিরার মধ্যে পার্থক্য কি তা জেনে আসতে পারেন।
রিটেক্স আইটি নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url