চিচিঙ্গা খাওয়ার ১৬টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

চিচিঙ্গা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আপনারা জেনে নিতে পারেন। চিচিঙ্গা এমন একটি সবজির নাম যেটি নানা পুষ্টিগুণে ভরপুর। এটি খাওয়ার ফলে শরীরের নানা উপকার হয়ে থাকে। তাই এর গুনাগুন জানা প্রয়োজন।

চিচিঙ্গা-খাওয়ার-উপকারিতা-ও-অপকারিতা
চিচিঙ্গা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে নিচের দেওয়া লেখাগুলো খুব যত্ন সহকারে পড়ার চেষ্টা করতে হবে। তাহলেই কেবলমাত্র আপনারা চিচিঙ্গার যাবতীয় গুণাবলী সম্পর্কে জানতে পারবেন।

সূচিপত্রঃ চিচিঙ্গার যাবতীয় গুণাবলী সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

চিচিঙ্গা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

চিচিঙ্গা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আপনারা জানতে চেয়েছেন। আজকের এই পর্বে আমরা চিচিঙ্গা খাওয়ার যাবতীয় ভালো দিক এবং খারাপ দিক সম্পর্কে জেনে নিব। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক। চিচিঙ্গা একটি সবজির নাম। এটি আমরা দৈনন্দিন জীবনে অনেক খেয়ে থাকি। কিন্তু হয়তো এর সঠিক গুনাগুন আমাদের আজও অজানা। তাই চিচিঙ্গার ভালো দিক এবং খারাপ দিক সম্পর্কেই আজকের এই পুরো আর্টিকেল। তাহলে চলুন এক এক করে সব জেনে নিই।

চিচিঙ্গার উপকারিতা গুলোঃ

  • অ্যাসিডিটি প্রতিরোধেঃ চিচিঙ্গা খাওয়ার ফলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা প্রতিরোধ হয়ে থাকে। তাই যাদের অতিরিক্ত গ্যাস, এসিডিটির সমস্যা হয় তারা তাদের খাদ্য তালিকায় চিচিঙ্গা যুক্ত করতে পারেন।
  • হজম শক্তি বৃদ্ধিতেঃ চিচিঙ্গা একটি আঁশ জাতীয় সবজি। এই সবজিটি খাওয়ার ফলে হজমের সমস্যা দূরীভূত হয়ে থাকে। যেসব শিশুর হজমের সমস্যা হয়, তাদের চিচিঙ্গার তরকারি খাওয়াতে পারেন। এর ফলে হজমের সমস্যা দূর হয়ে যাবে। তাছাড়াও যারাই হজমের সমস্যায় ভোগেন তাদের জন্য চিচিঙ্গার তরকারি হতে পারে একটি আদর্শ উপায়।
  • হাড় ও দাঁতের সুরক্ষায়ঃ চিচিঙ্গাতে নানা ধরনের পুষ্টি উপাদান রয়েছে। যেমন ধরেন, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম সেই সাথে প্রচুর পরিমাণে মিনারেলস। যা আমাদের শরীরের হাড় ও দাঁতের সুরক্ষায় অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
  • হার্টের সুরক্ষায়ঃ চিচিঙ্গা তরকারি খাওয়ার ফলে হার্টের স্বাস্থ্য ভালো থাকে। কেননা চিচিঙ্গাতে অ্যাসকরবিক অ্যাসিড, ক্যারোটিনয়েড, কিউকারবিটাসিন-বি ইত্যাদি নানা উপাদান থাকে। যেগুলো শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে থাকে। এই উপাদান গুলোই হার্টের মধ্যে রক্ত চলাচল ঠিক রেখে হার্টকে সুস্থ রাখতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে।
  • জন্ডিসে উপকারিঃ যাদের জন্ডিসের সমস্যা রয়েছে। তারা আজ থেকেই খাদ্য তালিকায় চিচিঙ্গা যোগ করুন। এটি জন্ডিস প্রতিরোধে কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে পারে।
  • ত্বকের সুরক্ষায়ঃ চিচিঙ্গা খাওয়ার ফলে ত্বকে বার্ধক্য আসার আগে বার্ধক্যের ছাপ করা প্রতিরোধ হয়। সেই সাথে ত্বকের মৃত কোষ জীবিত হয়। এছাড়াও ত্বককে উজ্জ্বল করে তুলতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে।
  • চুলের সুরক্ষায়ঃ আপনি যদি চুলের সমস্যায় ভুগে থাকেন। তাহলে আপনার জন্য চিচিঙ্গার রস হতে পারে একটি আদর্শ উপায়। চিচিঙ্গার রস চুলের গোড়ায় লাগালে চুল পড়া কমায়। টাক পড়া প্রতিরোধ করে। সেই সাথে চুলের গোড়া মজবুত করতেও ভূমিকা পালন করে। তাই আপনারা চিচিঙ্গার রস চুলের গোড়ায় লাগাতে পারেন।
  • কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায়ঃ কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা হলে আমাদের পেট ঠিকমতো পরিষ্কার হয় না। যার কারণে আপনারা চাইলে আপনাদের খাদ্য তালিকায় চিচিঙ্গা যোগ করতে পারেন। এটি পেট পরিষ্কার করে কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দূর করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে।
  • আলসার প্রতিরোধেঃ যাদের আলসারের সমস্যা রয়েছে। তাদের খাদ্য তালিকায় চিচিঙ্গা যোগ করা উচিত। এই সবজিটি আলসার প্রতিরোধে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে।
  • ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেঃ চিচিঙ্গা খাওয়ার ফলে ডায়াবেটিস প্রতিরোধে থাকে। তাই যাদের ডায়াবেটিস আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে বা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত তারা আজ থেকেই তাদের খাদ্য তালিকায় চিচিঙ্গা যোগ করতে পারেন। এটি ডায়াবেটিসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তুলতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
  • লিভারের সমস্যায়ঃ চিচিঙ্গা খাওয়ার ফলে চিচিঙ্গাতে থাকা হেপাটো প্রোটেকটিভ উপাদান লিভারে যাবতীয় সমস্যা দূর করতে অনেক বড় অবদান রাখে। তাই যারা লিভারের নানা সমস্যায় জর্জরিত রয়েছে। তারা তাদের খাদ্য তালিকায় চিচিঙ্গা যোগ করতে পারেন। এছাড়াও চিচিঙ্গা শরীরের বিষাক্ত পদার্থ বের করে দিয়ে লিভারের কার্যকারিতা বজায় রাখে।
  • কফ-কাশি প্রতিরোধেঃ কফ ও সর্দির ফলে টক্সিন ও বাইরের ক্ষতিকর উপাদান আটকে থাকার ফলে বড় ধরনের সমস্যা তৈরি করে। এ সমস্যা দূর করে কফ, সর্দি-কাশির প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তুলতে পারে চিচিঙ্গা। এটি খাওয়ার ফলে এ ধরনের যাবতীয় সমস্যা থেকে নিরাময় পাওয়া সম্ভব হয়।
  • উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেঃ যারা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের রোগী রয়েছেন। তারা তাদের খাদ্য তালিকায় চিচিঙ্গা যোগ করতে পারেন। এটি খাওয়ার ফলে উচ্চ রক্তচাপ সহ বুক ধরফর করার সমস্যা প্রতিরোধ হয়ে থাকে।
  • জ্বর প্রতিরোধেঃ চিচিঙ্গা খাওয়ার ফলে জ্বর প্রতিরোধ হয়ে থাকে। তাই যারা এ ধরনের সমস্যায় আক্রান্ত তারা চিচিঙ্গা খেতে পারেন।
  • হৃদস্পন্দন ঠিক রাখতেঃ চিচিঙ্গা খাওয়ার ফলে রক্তচাপ কমে গিয়ে হৃদস্পন্দনের কার্যকারিতা বজায় থাকে। কেননা এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম। যেটি এ ধরনের সমস্যায় সহায়তা করে থাকে।
  • ক্যান্সার প্রতিরোধেঃ চিচিঙ্গাতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। যেটি ক্যান্সার সৃষ্টিকারী ফ্রী রেডিক্যাল এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তুলে। যার ফলে ক্যান্সার প্রতিরোধ হয়ে থাকে।

চিচিঙ্গার অপকারিতা গুলোঃ

  • চিচিঙ্গা অতিরিক্ত খেলে পেট ফুলে যেতে পারে। এছাড়াও হজমের সমস্যা হতে পারে। ঠান্ডা জাতীয় সবজি হয় এটি কম খাওয়ায় ভালো হবে।
  • এই সবজিটি বেশি খাওয়ার ফলে ডায়রিয়ার সমস্যা হতে পারে।
  • যাদের কিডনিতে পাথর রয়েছে তাদের জন্য এটি খাওয়া বারণ। যেহেতু চিচিঙ্গায় অক্সালেট থাকে। সেহেতু এটি খেলে কিডনিতে পাথরের সমস্যা বৃদ্ধি পেতে পারে।
  • চিচিঙ্গাতে ক্যালোরি ও প্রোটিনের সংখ্যা খুবই কম থাকে। যার কারণে এটি অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে শরীরে পুষ্টির অভাব দেখা দিতে পারে। তাই এটি পরিমাণ মতো খাওয়া উচিত।
  • এটি খাওয়ার ফলে যাদের অ্যালার্জির সমস্যা হবে। তাদের এটি না খাওয়ায় ভালো হবে।

ওজন কমাতে চিচিঙ্গার কার্যকারিতা

ওজন কমাতে চিচিঙ্গার কার্যকারিতা সম্পর্কে আপনাদের জেনে নেওয়া প্রয়োজন। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক। যারা শরীরের বাড়তি ওজন নিয়ে অনেক বেশি চিন্তিত থাকেন। তারা চাইলে চিচিঙ্গা খাদ্য তালিকায় যুক্ত করতে পারেন। এটি আপনার শরীরের অতিরিক্ত মেদ কমানোর জন্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকবে। এই সবজিটিতে ক্যালরির পরিমাণ খুবই কম থাকে।

আরো পড়ুনঃ বিট লবণের ১৩টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন 

যার কারণে পেট ভরে খেলেও ওজন বাড়ার কোন সম্ভাবনা থাকে না। এছাড়াও চিচিঙ্গাতে রয়েছে ডায়েটারি ফাইবার। যেটি ওজন নিয়ন্ত্রণ করার জন্য অনেক বেসি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই উপাদানটির কারণে খাওয়ার খেলে দীর্ঘক্ষণ যাবৎ পেট ভরা থাকে। আর এর কারণে আপনি খাওয়া-দাওয়ার খুব কম করেন। আর বুঝতেই পারছেন খাওয়া-দাওয়া কম করা হলে এমনিতেই ওজন নিয়ন্ত্রনে থাকবে। তাই বলা যেতে পারে ওজন কমানোর জন্য চিচিঙ্গা হতে পারে একটি আদর্শ উপায়।

চিচিঙ্গায় থাকা পূষ্টি উপাদান

চিচিঙ্গায় থাকা পূষ্টি উপাদান সম্পর্কে আপনারা জানতে চেয়েছেন। আজকের এই পর্বে আমরা চিচিঙ্গায় থাকা যাবতীয় পুষ্টিগুন উপাদান সম্পর্কে জেনে নেওয়ার চেষ্টা করব। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক। চিচিঙ্গা নানা পুষ্টি গুনে সমৃদ্ধ। এই পুষ্টিগুণ গুলো আমাদের শরীরের নানা রোগবালাই দূর করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। নিচে সেই পুষ্টি উপাদান গুলো সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হলোঃ

প্রতি ১০০ গ্রাম চিচিঙ্গায়

পটাশিয়াম রয়েছে ৩৫৯.১ মিগ্রা, ভিটামিন সি রয়েছে ৩০.৫%, ভিটামিন ই রয়েছে ১.১%, ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে ৬.৭%, ফসফরাস রয়েছে ৫.০%, আয়রন রয়েছে ৫.৭%, ম্যাঙ্গানিজ রয়েছে ১২.৫%, আয়োডিন রয়েছে ৫.৯%, সোডিয়াম রয়েছে ৩৩.০ মিলিগ্রাম, ক্যালরি রয়েছে ৮৬.২ কিলোক্যালরি।

চিচিঙ্গা খাওয়ার নিয়ম

চিচিঙ্গা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আপনাদের জেনে নেওয়া প্রয়োজন। কেননা চিচিঙ্গা সবজিটি যেমন তেমন করে খাওয়ার ফলে এর সঠিক গুনাগুন পাওয়া যায় না। তাই নিয়ম মেনে এটি খাওয়া দরকার। চলুন তাহলে সেই নিয়ম গুলো দেখে আসি। বাজার থেকে চিচিঙ্গা কিনে আনার পর ভালোভাবে পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুতে হবে। কেননা এটি কেমিক্যাল যুক্ত থাকতে পারে।

পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুলে তা কেমিক্যাল মুক্ত হয়ে যাবে। এটি কাঁচা না খেয়ে রান্না করে খেতে হবে। তবে রান্না করার সময় মাথায় রাখতে হবে এতে বেশি মসলা দেয়া যাবে না। যদি মসলা দেওয়া হয় বেশি। তবে এর পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই মসলা কম দেয়ার চেষ্টা করতে হবে। প্রয়োজনমতো খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। অতিরিক্ত খাওয়া যাবে না। এটি সাধারণত দুপুরের খাবারের সাথে রান্না করে খেতে পারেন।

আরো পড়ুনঃ কাঁচা মরিচের ১৮টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন    

তবে মাথায় রাখতে হবে রাতে খেতে হবে হালকা এবং সেই সাথে কাঁচা চিচিঙ্গা খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। এছাড়াও আপনারা চাইলে বৃদ্ধ ও শিশুদের এটি খাওয়াতে পারেন। এই সবজিটি নরম হওয়ার কারণে বৃদ্ধ ও শিশু খুব সহজেই এটি চিবিয়ে খেতে পারবে।

যার ফলে এর যাবতীয় পুষ্টিগুণ সহজে নিজের দেহে ধারণ করতে পারবে। আশা করছি এই নিয়মগুলো মেনে চিচিঙ্গা খেলে এর যাবতীয় পুষ্টিগুণ পাওয়া সম্ভব হবে। এছাড়াও আপনারা চাইলে উপরের আলোচনা থেকে চিচিঙ্গা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং ওজন কমাতে চিচিঙ্গার কার্যকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে আসতে পারেন।

চিচিঙ্গা খাওয়ার উপকারিতা কি কি

চিচিঙ্গা খাওয়ার উপকারিতা কি কি এই সম্পর্কে আপনারা প্রশ্ন করে থাকেন। আজকের এই পর্বে আমরা চিচিঙ্গা খাওয়ার উপকারিতা গুলো কি কি সেই সম্পর্কে জেনে নেওয়ার চেষ্টা করব। চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক।

চিচিঙ্গা-খাওয়ার-উপকারিতা-কি-কি

  • হজম প্রক্রিয়া সহজ করে তোলে
  • হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
  • ডায়াবেটিকস প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে।
  • ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে।
  • জন্ডিসের চিকিৎসায় সহায়তা করে।
  • হাড় ও দাঁতের গঠন মজবুত করে।
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
  • ক্ষত নিরাময়ে সহায়তা করে।
  • কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দূর করে। 
  • জ্বর হলে তা প্রতিরোধ করে।
  • গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়।
  • লিভারের কার্যকারিতা বজায় রাখে।
  • কফ সর্দি-কাশি নিয়ন্ত্রণ করে।

চিচিঙ্গা কখন লাগাতে হয়

চিচিঙ্গা কখন লাগাতে হয় এই সম্পর্কে আপনাদের প্রশ্ন আসতে পারে। চলুন আজকে আমরা চিচিঙ্গা কোন সময়ে লাগালে এর ভালো ফলন পাওয়া যায় সেই সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে আসি। চিচিঙ্গা একটি সবজির নাম। এই সবজিটি সাধারণত আমরা সকলেই খেয়ে থাকি। এই সবজিটি আমরা বাসা বাড়িতে চাষ করেও থাকি। আবার অনেকে বাজার থেকে কিনে এনেও খেয়ে থাকি।

আরো পড়ুনঃ তেজপাতার ১৮টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন   

কিন্তু আপনি বাসা বাড়িতে চাষ করেই খেতে পারেন। তাই আপনাদের এখন প্রশ্ন আসতে পারে? কোন সময় এটা লাগালে ভালো ফলন পাওয়া যাবে সেই সম্পর্কে। আপনি চিচিঙ্গা বছরের যে কোন সময় লাগাতে পারেন। তাহলেই ভালো ফলন পেতে পারবেন। তবে মনে রাখতে হবে এই সবজিটি আপনি যদি শীতকালের মাস গুলো বাদ দিয়ে বছরের যে কোন সময় লাগান তবে শীতকালের তুলনায় ভালো ফলন পাবেন।

কেননা শীতকালে গাছের বৃদ্ধি কম হয় যার কারণে ফলনও খুব কম হয়। আশা করছি প্রশ্নের উত্তর পেয়েছেন।এছাড়াও আপনারা চাইলে উপরের আলোচনা থেকে চিচিঙ্গা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে আসতে পারেন।

চিচিঙ্গা গাছের রোগ

চিচিঙ্গা গাছের রোগ সম্পর্কে আপনারা প্রশ্ন করে থাকেন। আজকের এই পর্বে আমরা চিচিঙ্গা গাছের কেমন ধরনের রোগ হতে পারে সেই সম্পর্কে জেনে নেওয়ার চেষ্টা করব। চিচিঙ্গা সবজিটি অনেকে বাসা বাড়িতে চাষাবাদ করে খেয়ে থাকেন। কিন্তু আপনারা নতুন যারা তারা জানেন না চিচিঙ্গা গাছে কি ধরনের রোগ এসে ফলনের ক্ষতি করতে পারে। চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক।

আরো পড়ুনঃ শুকনা মরিচের ১৬টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানুন    

চিচিঙ্গা গাছে কয়েক ধরনের রোগ হয়ে থাকে। সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো চিচিঙ্গার কোণাচে দাগ রোগ, চিচিঙ্গা হোয়াইট মোল্ড রোগ, চিচিঙ্গা পাতার দাগ রোগ, চিচিঙ্গা পাতা কোকড়ানো রোগ, চিচিঙ্গা ডাউনি মিলডিউ রোগ ইত্যাদি। চিচিঙ্গা গাছের এ ধরনের রোগ গুলো হয়ে থাকে। আশা করি আজকের এই পর্বে চিচিঙ্গা গাছে কি ধরনের রোগ হতে পারে তা সম্পর্কে ধারণা পেয়েছেন। এছাড়াও আপনারা চাইলে উপরের আলোচনা থেকে চিচিঙ্গা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে আসতে পারেন।

চিচিঙ্গা গেলে কি গ্যাস হয়

চিচিঙ্গা গেলে কি গ্যাস হয় এই সম্পর্কে আপনারা জানতে চেয়েছেন। আজকের এই পর্বে আমরা চিচিঙ্গা খাওয়ার ফলে গ্যাসের সমস্যা হয় কিনা সেই সম্পর্কে জেনে নিব। চিচিঙ্গা একটি ফাইবার এবং আঁশ জাতীয় সবজি। এই সবজিটি অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়ার ফলে শরীরে বেশি মাত্রায় ফাইবার জমে গ্যাসের সমস্যা হতে পারে।

চিচিঙ্গা-গেলে-কি-গ্যাস-হয়
এছাড়াও আপনারা যদি কাঁচা চিচিঙ্গা খান তাহলেও এটি সহজে হজম হবে না। যার কারণে গ্যাস্ট্রিকের সৃষ্টি হবে। সেজন্য আপনাদের চিচিঙ্গা ভালোভাবে রান্না করতে হবে। এছাড়াও এটি অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। রান্না করার সময় এতে জিরা ও আদা ব্যবহার করতে হবে।
এটি খাওয়ার পরে বেশি পরিমাণে পানি খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। তাহলেই এটি সহজে হজম হয়ে যাবে। গ্যাসের আর কোন সমস্যা করবে না। এছাড়াও আপনারা চাইলে উপরের আলোচনা থেকে চিচিঙ্গা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে আসতে পারেন।

ডিম দিয়ে চিচিঙ্গা ভাজি

ডিম দিয়ে চিচিঙ্গা ভাজি তৈরি করার জন্য আপনাদের প্রথমে কিছু উপকরণ নিতে হবে। চলুন সেই উপকরণগুলো কি কি তা দেখে আসি।

  • পরিমাণ মতো সয়াবিন তেল
  • তিন চামচ লাল মরিচের গুঁড়া
  • দুই চামচ হলুদ গুঁড়া
  • কাঁচামরিচ দুই ফালি
  • দুইটি পেঁয়াজের কুচি
  • স্বাদমতো লবণ
  • একটা ডিম
  • একটি বড় চিচিঙ্গা
  1. এবার আপনারা চিচিঙ্গাটাকে ভালোভাবে পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে চামড়া ছাড়িয়ে কুচিকুচি করে কেটে ফেলবেন। এবার একটি কড়ায় নিয়ে তাতে পরিমাণ মতো সয়াবিন তেল গরম করে নিন। তারপর তাতে পেঁয়াজ কুচি অল্প করে ভেজে তার সাথে পরিমাণ মতো লবণ, হলুদ গুঁড়া, লাল মরিচের গুড়া দিয়ে দিন। এরপর চিচিঙ্গার কুচি দিয়ে সবগুলো উপকরণকে একসাথে নেড়ে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে ৫ মিনিট মত রান্না করতে থাকুন।
  2. এরপর পাঁচ মিনিট হয়ে এলে ঢাকনা তুলে চিচিঙ্গার ভাজি টুকুকে এক সাইডে করে একটি ডিম ভেঙে ঝুড়ি ঝুড়ি করে নিব। এরপর তা আগে থেকে এক সাইডে করে রাখা চিচিঙ্গার ভাজিটুকুর সাথে একসঙ্গে মিস করে দেব। তারপর সর্বশেষ কাঁচামরিচের দুইটা ফালি এগুলোর সাথে মিস করে দিয়ে পাঁচ মিনিট মত রান্না করতে থাকবো। তারপর রান্না হয়ে এলে গরম ভাতের সাথে পরিবেশন করুন।

লেখকের শেষ কথা 

উপরের আলোচনা থেকে আমরা চিচিঙ্গা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে এসেছি। আমরা আরো জানতে সক্ষম হয়েছি ওজন কমাতে চিচিঙ্গার কার্যকারিতা সম্পর্কেও। চিচিঙ্গা একটি সবজির নাম। এই সবজিটি আমরা আমাদের বাস্তব জীবনে সবাই খেয়ে থাকি। কিন্তু হয়তো আমরা এটি খাওয়ার ফলে কি ধরনের উপকারিতা পাওয়া যায় সেই সম্পর্কে আজও অজানা ছিলাম। 

আশা করছি আজকের পর থেকে আপনারা এ সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিতে পারবেন। উপরের আলোচনায় এই সম্পর্কে এ টু জেড আলোচনা করার চেষ্টা করা হয়েছে। এজন্য আমি মনে করি যে উপরের পোস্টটি যদি আপনারা ভালোভাবে পড়েন। তাহলে চিচিঙ্গার যাবতীয় গুনাগুন জানতে সক্ষম হবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

রিটেক্স আইটি নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url