বিট লবণের ১৩টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
সূচিপত্রঃ বিট লবনের যাবতীয় গুণাবলী সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নিন
বিট লবণের উপকারিতা ও অপকারিতা
বিট লবণের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আপনারা জানতে চেয়েছেন। আজকের এই পর্বে আমরা বিট লবনের যাবতীয় ভালো দিকগুলো এবং খারাপ দিকগুলো আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করব। বিট লবনের অনেক উপকারিতা থাকলেও এর কিছু খারাপ দিকেও রয়েছে। যেগুলো আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক। তাই আজকে বিট লবনের প্রথমে ভালো দিকগুলো এবং পরে খারাপ দিকগুলো নিয়ে আলোচনা করব। চলুন আলোচনা করা যাক।
হাড়ের ক্ষয় প্রতিরোধেঃ বিট লবণ খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরের হাড়
সুরক্ষিত থাকে। তাই শরীরের হাড়কে সুরক্ষিত রাখতে নিয়মিত বিট লবন খাওয়ার
চেষ্টা করুন।
ঠান্ডা কাশি সমস্যায়ঃ গরম পানির সাথে বিট লবণ মিশিয়ে গার্গল করার
ফলে সর্দি, কাশি, সাইনাসের সমস্যা, গলা ব্যথা ইত্যাদি নানা সমস্যা থেকে মুক্তি
পাওয়া সম্ভব হয়।
মানসিক চাপ কমাতেঃ বিট লবণ খাওয়ার ফলে মানসিক চাপ কমে থাকে। এতে
থাকা এক ধরনের উপাদান মানসিক চাপ কমাতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই
মানসিক চাপ কমানোর জন্য এই লবণ খেতে পারেন।
বিট লবণের অপকারিতাঃ
বিট লবণ অনেক উপকারিতা বয়ে আনলেও এর আবার কিছু খারাপ দিক রয়েছে। যেগুলো আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক বেশি ক্ষতিকর। চলুন সেগুলো জেনে আসি। প্রয়োজনের অতিরিক্ত কোন কিছু খাওয়াই স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। বিট লবণ ঠিক তেমনি। বিট লবণ অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে শরীরের জন্য তা বিশ হিসেবে গঠিত হয়।
এজন্য অনেক ডাক্তার একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের জন্য নিয়মিত সর্বোচ্চ ৮ গ্রাম
বিট লবন খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এছাড়াও অতিরিক্ত পরিমাণে বিট লবণ খাওয়ার
ফলে ফ্লুরোসিসের মতো ভয়াবহ রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও
বিট লবণ প্রচুর পরিমাণে টক্সিক সমৃদ্ধ। যার কারণে এটি অতিরিক্ত খাওয়া থাইরয়েড
গ্রন্থি, হাড়, জয়েন্টের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক। তাই এটি নিয়ম মেনে খাওয়ার
চেষ্টা করবেন। তাহলে এর সকল উপকারগুলো পাওয়া সম্ভব হবে।
গর্ভাবস্থায় বিট লবণ খাওয়া যাবে কি
আরো পড়ুনঃ নিম পাতার বড়ি খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে অবাক করা তথ্য জানুন
বিট লবণ খেলে কি ওজন বাড়ে
বিট লবণ খেলে কি ওজন বাড়ে এ সম্পর্কে আপনারা প্রশ্ন করে থাকেন। আজকের এই পর্বে আমরা জেনে নেওয়ার চেষ্টা করব বিট লবণ খাওয়ার ফলে ওজন কমে থাকে না বেড়ে থাকে সেই সম্পর্কে। বিট লবন অত্যন্ত উপকারী। এ লবনটি সাদা লবণের তুলনায় অনেক বেশি উপকারী। ওজন কমানোর জন্য বিট লবন দিয়ে তৈরি একটি বিশেষ পানি খেলে খুব সহজে ওজন কমে যাবে।
এজন্য প্রথমে একটি কাঁচের বৈয়ম নিয়ে তাতে ৫০০ মিলিলিটার পানি দিয়ে দিন। এবার এই পানিতে দুই চামচ মত বিট লবণ মিস করে দিন। তারপর ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিন। যাতে এতে কোন বাতাস ঢুকতে না পারে। এভাবে সারা রাত রেখে দিন।
সকালে ঘুম থেকে উঠে একটি গ্লাসে দুই চামচ বয়েম থেকে বিট লবণের পানি নিয়ে বাদবাকি গরম কুসুম পানি দিয়ে গ্লাসটি ভর্তি করে নিন। তারপরে পানি খেয়ে ফেলুন। এই পানিটি সকালে খালি পেটে খাওয়ার চেষ্টা করবেন। তবে মাথায় রাখবেন সপ্তাহে এটি দুই বার করার চেষ্টা করবেন। তাহলে খুব সহজে ওজন নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।
বিট লবণ খাওয়ার নিয়ম
বিট লবণ খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আপনারা জানতে চেয়েছেন। আজকের এই পর্বে আমরা বিট লবণ কিভাবে খেলে উপকার পাওয়া যাবে সেই সম্পর্কে জেনে নেওয়ার চেষ্টা করব। বিট লবণ সাদা লবনের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। সাদা লবণের তুলনায় বিট লবণ অনেক উপকারী। এটি সকালে খাবারের সময় এক চিমটি পরিমাণ ছিটিয়ে খেতে পারেন।
এছাড়াও গরম কুসুম পানিতে এক চিমটি বিট লবণ ছিটিয়ে দিয়ে সেই পানি খেতে পারেন। আবার যে কোন ফলমূল খাওয়ার সময় আমরা সাধারণত সাদা লবণ দিয়ে খেয়ে থাকি। কিন্তু আজকের পর থেকে আপনারা এটা করা থেকে বিরত থাকবেন।
আরো পড়ুনঃ আখের গুড়ের ১৫টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
আপনারা এই জায়গায় সাদা লবণ ব্যবহার না করে বিট লবণ দিয়ে খাওয়ার চেষ্টা করবেন। এতে উপকারিতাও পাওয়া যাবে। এছাড়াও লেবুর শরবত তৈরি করার সময় আপনারা যদি এতে সাদা লবন না দিয়ে বিট লবণ দিয়ে খান তবে শরীরে এনার্জি পাওয়া যাবে। এভাবে আপনারা বিট লবণ খেতে পারেন।
বিট লবণ কিভাবে তৈরি হয়
বিট লবণ কিভাবে তৈরি হয় এ সম্পর্কে আপনারা জানতে চেয়েছেন। আজকের এই পর্বে আমরা বিট লবণ কিভাবে তৈরি করতে হয় সে সম্পর্কে আপনাদের ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করব। বিট লবণ সাধারণত বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান এবং নেপালের হিমালয়ের আশেপাশের এলাকার অর্থাৎ যেসব এলাকা গুলো লবণ সমৃদ্ধ। সেখান থেকে অর্থাৎ মাটির নিচ থেকে পাথর আকারে বিট লবণ সংগ্রহ করা হয়।
বিট লবণ যে সকল উপাদানের মাধ্যমে তৈরি হয়েছে সেগুলো হল সোডিয়াম ক্লোরাইড, সোডিয়াম সালফেট, লোহা, ম্যাগনেসিয়াম, ফেরিক অ্যাসিড, ফেরাস সালফেট ইত্যাদি। এই লবণ খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরের নানা উপকারিতা সাধিত হয়ে থাকে। তাই আপনারা চাইলে সাদা লবণকে দূরে সরিয়ে দিয়ে এ লবনটিকে ব্যবহার করতে পারেন।
বিট লবণের দাম
বিট লবণের দাম সম্পর্কে আপনারা জানতে চেয়েছেন। আজকের এই পর্বে আমরা বিট লবণের দাম কেমন হতে পারে তা সম্পর্কে জেনে নেওয়ার চেষ্টা করব। বিট লবনের দাম আপনার সাধ্যের মধ্যে হয়ে থাকে। অনলাইনে বিভিন্ন শপে এই বিট লবণ বয়ম আকারে বিক্রি হয়ে থাকে। ২৫০ গ্রাম বিট লবণের দাম ৮৫ টাকা। আবার ১০০ গ্রাম বিট লবন এর দাম ৩৫ টাকা করে হয়ে থাকে।
আপনি যদি কেজি হিসাবে চিন্তা করেন তাহলে প্রতি কেজি বিট লবণের দাম ১৩০০ টাকা দরে বিক্রি হয়ে থাকে। এই দাম গুলো জায়গা অনুযায়ী পরিবর্তন হতে পারে। আমরা অনলাইনের একটি সাইটে বিট লবণের দাম দেখেছি ৭৯ টাকা। অর্থাৎ এতে আপনি ২০০ গ্রাম বিট লবন পেয়ে থাকবেন। তাহলে বুঝতেই পারছেন বিট লবণের দাম এরকমই হয়ে থাকে।
আরো পড়ুনঃ বরই পাতার উপকারিতা এলার্জি নির্মূলে এই সম্পর্কে জানুন চাঞ্চল্যকর তথ্য
আপনার এলাকার কোন মুদি দোকানে এই বিট লবণ সহজ দামে খুব সহজে কিনে নিতে পারবেন। এছাড়াও উপরের আলোচনা থেকে আপনারা চাইলে বিট লবণের উপকারিতা ও অপকারিতা এবং গর্ভাবস্থায় বিট লবণ খাওয়া যাবে কি এই সম্পর্কেও জেনে আসতে পারেন।
বিট লবণের ক্ষতিকর দিক
বিট লবণের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে আপনারা জানতে চেয়েছেন। আজকের এই পর্বে আমরা বিট লবনের যাবতীয় ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে জেনে নেওয়ার চেষ্টা করব। বিট লবণ সাদা লবনের তুলনায় অনেক বেশি উপকারী। এটি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারিতা বয়ে আনে। তবে এই লবনের কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে।
চলুন সেগুলো জেনে নিই। বিট লবনের উপকারিতা রয়েছে ঠিকই তবে আপনি যদি এটি বেশি পরিমাণে খান তবে উপকারীতা তো পাবেন না বরং এর ফলে ক্ষতি হবে। এটি অতিরিক্ত খেলে ফ্লুরাইড বিষক্রিয়ার সৃষ্টি হতে পারে। এছাড়াও বিট লবণ খাওয়ার ফলে রক্তস্বল্পতা বা রক্ত প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করতে পারে এবং সেই সাথে পাকস্থলীর ঝিল্লির ক্ষতি সাধন করতে পারে।
আরো পড়ুনঃ করলার জুসের ১৫টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
এছাড়াও বিট লবণ দিয়ে তৈরি আয়ুর্বেদিক কোন ঔষধ খাওয়া থেকে সম্পূর্ণরূপে থাকবেন। নিয়ম মেনে বিট লবন খাওয়ার চেষ্টা করুন। আশা করছি এর সঠিক গুনাগুন পেতে সক্ষম হবেন। এছাড়াও উপরের আলোচনা থেকে আপনারা চাইলে বিট লবণের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জেনে আসতে পারেন।
বিট লবণ কোথায় পাওয়া যায়
বিট লবণ কোথায় পাওয়া যায় এ সম্পর্কে আপনারা প্রশ্ন করে থাকেন। আজকের এই পর্বে আমরা বিট লবন কোথায় পাওয়া যেতে পারে সেই সম্পর্কে আলোচনা করার চেষ্টা করব। বিট লবন একটি উপকারী সামগ্রী। সাদা লবনের তুলনায় বিট লবণ অনেক উপকারী। এটি আপনারা বিভিন্ন ফলমূলের সাথে অথবা খাবারের সাথে ছিটিয়ে খেতে পারেন।
এগুলোতেও খোঁজ নিতে পারেন। এগুলোতে প্যাকেট আকারে বিক্রি হয়ে থাকে। এই জায়গাগুলো থেকে মূলত আপনারা বিট লবণ সংগ্রহ করতে পারেন। এছাড়াও উপরের আলোচনা থেকে আপনারা চাইলে বিট লবণের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জেনে আসতে পারেন।
বিট লবণ খেলে কি প্রেসার বাড়ে
বিট লবণ খেলে কি প্রেসার বাড়ে এ সম্পর্কে আপনারা জানতে চেয়েছেন। আজকের এই পর্ব থেকে আমরা এই বিষয়টি ভালোভাবে ক্লিয়ার হয়ে নেব। বিট লবণ একটি উপকারী সামগ্রী। এটি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তবে মাথায় রাখতে হবে যে কোন লবনেই রয়েছে সোডিয়াম।
যা শরীরে পানি ধরে রাখতে ভূমিকা রাখে। আর এর কারণেই আমাদের শরীরের কিডনির কার্যক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়। আর এ কারণগুলোর জন্যই ব্লাড প্রেসার হয়ে যেতে পারে। তাই যারা ব্লাড প্রেসারে আক্রান্ত রয়েছেন তাদের জন্য বিট লবণ খাওয়া মোটেই ঠিক হবে না। এটি আপনার প্রেসার বাড়িয়ে তুলতে কাজ করে থাকে। তাই যারা ব্লাড প্রেসারে আক্রান্ত রয়েছে।
তাদের জন্য বিট লবণ খাওয়া কোনভাবেই ঠিক হবে না। শুধু বিট লবণ নয় এমনি সাধারণ লবণও বেশি পরিমাণে খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। তাহলে বুঝা গেল বিট লবণ খাওয়ার ফলে প্রেসার বেড়ে থাকে। এছাড়াও উপরের আলোচনা থেকে আপনারা চাইলে বিট লবণের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জেনে আসতে পারেন।
রিটেক্স আইটি নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url