হজম শক্তি কমে যাওয়ার লক্ষণগুলো বিস্তারিতভাবে জেনে নিন

• হজম শক্তি কমে যাওয়ার লক্ষণগুলো জানুন
• হজম শক্তি বৃদ্ধির খাবার সম্পর্কে জেনে নিন
• লিভারের হজম শক্তি কমে গেলে কি হবে
• পেটে হজম শক্তি বৃদ্ধির উপায়
• শিশুর খাবার হজম না হওয়ার কারণ
• হজম শক্তি বৃদ্ধির ব্যায়াম করুন
• পেটে হজম না হলে করনীয়
• হজম শক্তি কমে গেলে কি হয়
• হজমের সমস্যা দূর করার উপায়
• লেখকের শেষ কথা 

হজম শক্তি কমে যাওয়ার লক্ষণগুলো জানুন

হজম শক্তি কমে যাওয়ার লক্ষণগুলো আমাদের জেনে নেওয়া খুবই জরুরী। কেননা হজম শক্তি কমে যাওয়ার জন্য কিছু কারণ দায়ী। চলুন সেই কারণগুলো আমরা বিস্তারিতভাবে জেনে আসি। আমরা প্রথম কারণ হিসেবে দেখতে পারি যে আমরা যখন খাবার খাই তখন তা খুব দ্রুত খাই। এটি মোটেও করা যাবে না। আবার খাওয়ার সময় আমরা ভালোভাবে খাবারটা চিবায় না। এছাড়াও অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করার ফলেও হজমের শক্তি কমে যায়।

আপনি যদি নিয়মিত রাত জাগেন বা ডিউটি করেন তবে হজমের সমস্যা হতে পারে। এছাড়াও আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ সঠিক সময়ে খাওয়ার অভাবে হজম শক্তি কমে যায়। হজম শক্তি কমে যাওয়ার আরেকটি কারণ হচ্ছে খাবারে অতিরিক্ত তেল, মশলা খাওয়া। তৈলাক্ত চর্বিযুক্ত খাবার বেশি খেলে হজম শক্তি কমে যায়। তাই এটি খাওয়া থেকে দূরে থাকতে হবে। আবার এমন অনেক মানুষ আছেন যারা দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকে।

যখন খাবার পান তখন একসঙ্গে অনেক বেশি খেয়ে ফেলেন। এটি মোটেও করা যাবে না। হজম শক্তি কমে যাওয়ার কারণ গুলোর মধ্যে অন্যতম কারণ হলো যাদের মাত্রাতিরিক্ত অ্যাসিডের সমস্যা রয়েছে, অতিরিক্ত কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা রয়েছে তাদের হজম শক্তি কমে যায়। আবার যদি রক্তে চিনির মাত্রা যদি অতিরিক্ত হয়ে যায় তাহলে কিন্তু একেবারে হজম শক্তি দুর্বল হয়ে যায়। আবার যে সকল মানুষ মাদকদ্রব্য, ধূমপান।

অতিরিক্ত চা কপি,গুল,জর্দা এ সবে আসক্ত। তারা এসব খাবার খাওয়ার ফলে হজম শক্তি পুরোপুরি দুর্বল হয়ে যায়। তাই এগুলো খাওয়া থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করতে হবে। যাদের পানি খুব অল্প পরিমাণে খাওয়ার অভ্যাস হয়েছে। তাদের হজমের সমস্যা থাকতে পারে। তাই তাদের হজম শক্তিকে ভালো রাখার জন্য দিনে অন্তত তিন থেকে চার গ্লাস পানি পান করতে হবে। যারা ওজন বেড়ে যাওয়ার কারণে অতিরিক্ত খাওয়ার নিয়ন্ত্রণ করে ফেলে।

তাদের এটি করা মোটেও ঠিক নয়। কেননা এর ফলে হজম শক্তি কমে যায়। আবার যারা খাদ্যনালী খাদ্য অপারেশন করেছেন তাদের তাদের হজম শক্তির সমস্যা দেখা দিতে পারে।

হজম শক্তি বৃদ্ধির খাবার সম্পর্কে জেনে নিন

হজম শক্তি বৃদ্ধির খাবার সম্পর্কে আমাদের জেনে নেওয়া উচিত। কেননা এর ফলে আমরা খুব সহজেই হজমশক্তি বৃদ্ধি করতে পারব। চলুন আমরা সেই সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জেনে আসি। আমরা যখন খাবার খাব তখন খাবারটা খেতে হবে চিবিয়ে। আপনি আপনার খাবার মেনুতে লেবু রাখতে পারেন। কেননা লেবু হল এমন একটি ফল যেটি হজম ভিত্তিতে সহায়তা করে থাকে। আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি করার জন্য দুধ খাওয়া। 

মোটেও ঠিক হবে না। এজন্য দুধের পরিবর্তে দই খেতে হবে। এতে ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি হজম শক্তি বৃদ্ধিতে ও সহায়তা করে থাকবে। হজম শক্তি বৃদ্ধি করার জন্য গ্রিন টি বা পুদিনা পাতার চা খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। এটি আপনি খেতে পারেন দিনে অন্তর দুইবার। তাহলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পাবে। হজম শক্তি বৃদ্ধির জন্য আঁশ যুক্ত খাবার খেতে হবে।আঁশ যুক্ত খাবার খাওয়ার ফলে পানি শোষণ করে।

ফলে এটি আমাদের হজম শক্তি বাড়াতে সয়ায়তা করে থাকে। আর আঁশ যুক্ত খাবার গুলোর মধ্যে অন্যতম হলো শাক সবজি,ফল ইসবসগুল,সালাত ইত্যাদি। আবার পানিযুক্ত ফল অর্থাৎ পানি আছে বেশি এমন ফল যেমন ধরেন তরমুজ, বাঙ্গি, শসা, টমেটো, লাউ ইত্যাদি খাবার খেতে পারেন। তাহলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পাবে। হজম শক্তি বৃদ্ধির জন্য পানি খাওয়ার কোন বিকল্প নেই। তাই দিনে অন্তত ১০ থেকে ১২ গ্লাস পানি পান করতে হবে।

আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় সজনে পাতার উপকারিতা জেনে নিন

আপনি যদি নিয়মিত ব্যায়াম করেন তাহলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পেতে পারে। তাই দিনে অন্তত ৩০ মিনিট আপনাকে ব্যায়াম করার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। তাহলেই আপনি আপনার হজমশক্তি বৃদ্ধি করতে পারবেন। এভাবে আপনি হজম শক্তি কমে যাওয়ার লক্ষণগুলো মেনে চললে হরমশক্তি খুব সহজেই বাড়াতে পারবেন।

লিভারের হজম শক্তি কমে গেলে কি হবে

লিভারের হজম শক্তি কমে গেলে কি হবে? এ সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই জানার রয়েছে। চলুন আজকে এ বিষয়ে আমি আপনাদের বিস্তারিত জানিয়ে দেবো। লিভারে হজম না হওয়ার কারণ হচ্ছে এখানে বিভিন্ন রোগের সৃষ্টি হয়ে থাকে। যার ফলে লিভারে হজম শক্তি কমে যায়। চলুন কমে গেলে কি হয় সেটি জেনে নিই লিভারের হজম শক্তি কমে গেলে পিত্তথলিতে পাথর হতে পারে। এটি হওয়ার কারণ যকৃৎতে যখন হজম শক্তি কমে যায়।

তখন পিত্তথলিতে পিত্তরস উৎপন্ন হতে বাধা সৃষ্টি হয়। য়ার ফলে ডায়রিয়ার সমস্যা হয়। এটি হওয়ার কারণ হলো মশলাযুক্ত খাবার খাওয়া। এই খাবারগুলো খাওয়ার ফলে পরিপাকতন্ত্রে হজম হয় না ঠিক মতো। তাই এইসব খাবারগুলো এড়িয়ে চলার চেষ্টা করতে হবে। আবার এইসব মসলাযুক্ত খাবার খাওয়ার ফলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা হতে পারে। কারণ এটি পরিপাকতন্ত্রে সহজে হজম হতে বাধা দেয়। 

লিভারের হজমশক্তি কমে গেলে পেটে ব্যথা অনুভব হয়। কারণ হজম সমস্যা দেখা দিলে পরিপাকতন্ত্রে পরিপাক হতে বাধা হয়। তাই এমনটি হয় লিভারের হজমশক্তি কমে গেলে কি হবে এ প্রশ্নে আমরা আরো কয়েকটি কারণ দেখে নিতে পারি সেটি হল জন্ডিসের সমস্যা হতে পারে, আবার বারবার বমি হতে পারে, দেহের টক্সিতের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে যায়, অরুচি ভাব আসে এবং সর্বশেষ যে পয়েন্টটি বলবো সেটি হল প্রসাবের সমস্যা হতে পারে।

পেটে হজম শক্তি বৃদ্ধির উপায় 

পেটে হজম শক্তি বৃদ্ধির উপায় সম্পর্কে আমাদের অনেকেই জানতে চাই। চলুন আজকে এ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে আসি। পেটে হজম শক্তি বৃদ্ধির কিছু উপায় রয়েছে। এই উপায় গুলো যদি আপনি মেনে চলেন, তাহলে পেটে  হজমশক্তি সহজে বৃদ্ধি পাবে। এর জন্য আমাদের হজম শক্তি কমে যাওয়ার লক্ষণ গুলো জানতে হবে। পেটে হজম শক্তি বৃদ্ধির জন্য আপনি যেকোনো খাবার খাবার সময় চিবিয়ে  খাবেন। 

খাওয়ার পরেই আপনি কোন কাজে দৌড়ে যাবেন না। আপনার যদি রাত জাগার অভ্যাস থাকে তাহলে তা দূর করতে হবে। নিজে যে খাবার খান সেসব খাবারে মসলার পরিমাণ খুব কম থাকতে হবে।তৈলাক্ত চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। আমাদের কিছু বাজে অভ্যাস রয়েছে। যেমন মাদকদ্রব্য, ধূমপান, অতিরিক্ত চা কফি এগুলো খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। আপনি চাইলে গ্রিন টি বা পুদিনা পাতার চা খেতে পারেন। 

বেশি বেশি আঁশ যুক্ত খাবার খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে।যেসব খাবার এ পানির পরিমাণ বেশি যেমন ধরেন শসা, টমেটো এসব খাবার খেতে হবে। ২৪ ঘন্টাই অন্ততপক্ষে ১০ থেকে ১২ গ্লাস পানি খেতে হবে। এসব কারণগুলো মেনে কাজ করলে অবশ্যই পেটে হজম শক্তি বৃদ্ধি পাবে। 

শিশুর খাবার হজম না হওয়ার কারণ

শিশুর খাবার হজম না হওয়ার কারণ সম্পর্কে অনেকে জানতে চাই। চলুন আজ এই সম্পর্কে জেনে নিই।  শিশুদের যখন হজমের সমস্যা হয় তখন একসাথে অনেক সমস্যা হয়।  যেমন ধরেন পেট ব্যাথা, বমি হওয়া, গ্যাসট্রাসিস ইত্যাদি সব মিলে একাকার। এজন্য আপনাদের যেটা মনে রাখতে হবে শিশুদের বাইরের কোন খাওয়ার খাওয়া যাবে না।  তাদের চেষ্টা করতে হবে ঘরের যত রকমের পুষ্টিকর খাবার হয়েছে সেগুলো খাবার।

এই সমস্যাটা বেশি দেখা যায় দুই থেকে তার ওপরের বাচ্চাদের ক্ষেত্রে বেশি। এই বয়সের বাচ্চাদের সমস্যা হবে এটাই স্বাভাবিক।  কিন্তু অনেক মা আছে যারা এটা বুঝতে চায় না। অনেক সময় আমরা বাচ্চাদের জ্যাঙ্কফুট খাইয়ে থাকি।  এটি মোটেও ঠিক নয়।  কারণ এতে থেকে ইনফেকশন হতে পারে। ইনফেকশন হওয়ার ফলে ডায়রিয়া হতে পারে।  আর এভাবে যদি বারবার ইনফেকশন হতে থাকে। 

তাহলে শিশুর হজম শক্তি কমে যায়। তাই আমি বলতে পারি যে শিশুদের আপনি বাইরের খাবারের থেকে ঘরের খাবারের প্রতি আগ্রহী করে তুলবেন। 

হজম শক্তি বৃদ্ধির ব্যায়াম করুন

হজম শক্তি বৃদ্ধির ব্যায়াম সম্পর্কে জানতে চাইলে আপনাদের জানতে হবে হজম শক্তি কমে যাওয়ার লক্ষণগুলো। এই সম্পর্কে জানতে পারলে আপনি খুব সহজেই হজম শক্তি বৃদ্ধির ব্যায়াম করতে পারবেন। চলুন সেই সম্পর্কে এখন বিস্তারিত জেনে নিই। আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য ব্যায়াম করার কোন বিকল্প নেই। আমরা এখন হজম শক্তি বৃদ্ধিতে কি ব্যায়াম করা দরকার সেগুলো জানি। 

হজম শক্তি বৃদ্ধির জন্য আপনি যোগ ব্যায়াম করতে পারেন। এটির অনেক উপকারিতা রয়েছে। এ ব্যায়াম করার ফলে পাকস্থলী, ক্ষুদ্রান্ত সচল থাকবে। এটি এমন একটি ব্যায়াম যে ব্যায়াম করার ফলে আপনার হজম শক্তি বৃদ্ধি পাবে।

পেটে হজম না হলে করনীয়

পেটে হজম না হলে করণীয় এই সম্পর্কে আমাদের অনেকেই জানার আছে। চলুন আজ আমরা এ সম্পর্কে জেনে নিই। পেটে হজম না হলে আপনার যা করতে হবে হজমশক্তি কমে যাওয়ার লক্ষণগুলো আগে জানতে হবে। তাহলে আপনি খুব সহজেই বুঝতে পারবেন কেন পেটে হজম হচ্ছে না? পেটে হজম না হলে করণীয় হলো

• যে কোন খাবার খাওয়ার আগে ভালোভাবে চিবিয়ে খেতে হবে।
• অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করা যাবে না। 
• রাত জাগার অভ্যাস থাকলে তা ত্যাগ করতে হবে।
• সঠিক সময়ে খাবার খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
• তৈলাক্ত ও চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
• দীর্ঘ সময় না খেয়ে থেকে আবার খাবার পেলেই একসাথে অনেক খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
• মাদকদ্রব্য, ধূমপান, অতিরিক্ত চা-কফি খাওয়া থেকে দূরে থাকতে হবে।

হজম শক্তি কমে গেলে কি হয়

হজম শক্তি কমে গেলে কি হয়? এ সম্পর্কে জানার আগ্রহ অনেকেরই রয়েছে। চলুন আজ এই সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো। আমরা এর আগে হজম শক্তি কমে যাওয়ার লক্ষণগুলো জেনে এসেছি। হজম শক্তি ঠিক না থাকলে আমাদের দেহে নানা প্রকার শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। এ সকল সমস্যা আমাদের দেহকে অচল করে ফেলে। চলুন দেখে নিই কি কি সমস্যা দেখা দেয়। ভালোভাবে হজমশক্তি না হলে আমাদের দেহের ওজন বেড়ে যায়।

তাই হজমশক্তি বাড়াতে হবে। হজম শক্তি যখন কমে যায় তখন দেহে ইউরিক এসিডের পরিমাণ বেড়ে যায়। এছাড়াও আমরা আরো বলতে পারি হজম শক্তি কমে যাওয়ার ফলে আমাদের রক্তের থাকা গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যায়। বেড়ে যাওয়ার ফলে শারীরিক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তাই আমাদের হজম শক্তি যাতে কমে না যায় সেদিকে নজর রাখতে হবে। এজন্য আপনাকে হজম শক্তি কমে যাওয়ার লক্ষণ গুলো ভালোভাবে জেনে নিতে হবে।

সেগুলো নিয়মিত মেনে চলতে হবে এবং হজম শক্তি বৃদ্ধির খাবার গুলো খেতে হবে। তাহলেই আপনার হজমশক্তি বৃদ্ধি পাবে।

হজমের সমস্যা দূর করার উপায়

লেখকের শেষ কথা